• 1
  • 2

হাঁড়ির হাল - পর্ব 3

null says: null

ব্যাগটা নিয়ে নেমে যেতেই ড্রাইভার কান্নাকাটি শুরু করল। আমি দাবী করলাম যে আমি তো আগেই বলেছিলাম মিটার চালিয়ে আসতে, তাহলে তো টাইম নিয়ে এত ভাবতে হত না। কিন্তু সে নাছোড়বান্দা। আরও পঞ্চাশ টাকা নিয়েই ছাড়ল।
বিগত পাঁচ বছরে কোলকাতার জনসংখ্যা বেড়েছে প্রায় পাঁচ লক্ষ। আবার দিল্লী শহরে বিগত দুই বছরেই সেই সংখ্যাটা প্রায় দশ লক্ষ। জনগণনার বাইরে হয়ত সংখ্যাটা আরও বেশি হবে। সে যাইহোক জীবনযাত্রার সুবিধা যত বাড়বে জনসংখ্যা ততই বাড়বে এ আর আশ্চর্য কি। কিন্তু সমস্যাটা হল ক্যাপাসিটি – ধারণক্ষমতা। আমাদের প্রিয় শহরগুলি আর কতদিন এভাবে আমাদের আশ্রয় দিতে পারবে? তিন বছর আগেও এতটা রাস্তাভর্ত্তি জনতা দেখতে পেতাম না। আর এখন অফিস যেতে মাত্র দশটি মিনিট লেট হলে পাক্কা এক ঘন্টা কাটিয়ে দিতে হয় দশ মিনিটের রাস্তায়।
অফিস তো নাহয় সময়ে পৌঁছে গেলাম, কিন্তু ফেরার সময়? আট ঘণ্টার চাকরি, লাঞ্চ টাইম মিলিয়ে সাড়ে আট বা ধরুণ নয় ঘন্টা কাটিয়ে যেই বেরিয়েছি, ওব্বাবা! দেখতে পাবেন জনতা কারে কয়।
তবে দশঘণ্টা অফিস করে বেরোলে কিন্তু আপনি নিশ্চিন্তে বাড়ি চলে যেতে পারবেন, ভিড় ছাড়াই। কিন্তু খামোকা দশ ঘন্টা করতে যাবেন কেন আপনি, যেখানে আট ঘন্টা কাজের দাবিতে চলছে এত আলোড়ন!
সেদিন বরাবরের মত অটোয় চেপে অফিস যাচ্ছি, রাস্তা মোটামুটি বন্ধ। পাঁচ মিনিটে দুপা দুপা করে এগোচ্ছে। সবার গা ঘামে ভিজে একাকার, হত কারও কারও মাথাও ঘেঁটে ঘন্ট। এরই মাঝে দুএকটা মোটরবাইক টেনেটুনে পাশ কাটিয়ে এগিয়ে যাবার চেষ্টা করতে লাগল। একজন তো ধরাশায়ীও হল একবার। স্পিড তেমন ছিল না তাই আঘাতও তেমন লাগেনি। কিন্তু সে চালক এমন এক হিরোসুলভ ভাব দেখিয়ে বাইকটাকে তুলে নিয়ে এগিয়ে গেল, দেখে যেন মনে হল কিছুই হয়নি। [এখানে একটা উদাহরণ না দিলেই নয়। শীতকালে নিশ্চয়ই সবার ঠাণ্ডা লাগে। কিন্তু সেই ঠাণ্ডায় কানে মাফলার বাঁধা বা টুপি পরাকে পৌরুষের অপমান বলে মনে করেন কেউ কেউ, এবং যথারীতি খালি মাথায় সমস্ত ঠাণ্ডাটা সহ্য করে পৌরুষ জাহির করে ঠাণ্ডা লাগিয়ে বসেন।]
পাশের লেনটা খালি ছিল। আমার অটোচালক সেদিক দিয়ে ঘুরিয়ে গাড়িটা একটু এগিয়ে দিল। হঠাৎ পিছন থেকে একজন একাকী গাড়ির মালিক বেড়িয়ে এসে শুরু করল চরম অপমান।
- এই তোমাদের মত অটোওয়ালারা আছে বলেই রাস্তায় জ্যাম লাগে। খালিই এদিক ওদিক করবে আর রাস্তা ব্লক করবে।
বেচারা অটোওয়ালা নিজের কোন দোষ দেখতে না পেয়ে চুপ করে রইল।
ভাবছিলাম, হ্যা ভাবছিলাম... কে বেশী দায়ী। পাশের লেন দিয়ে (যদিও রং সাইড নয়) একটু এগিয়ে নিতে চাওয়া অটোওয়ালা, নাকি একার জন্য ইয়াব্বড় একটা গাড়ি নিয়ে রাস্তা বুক করা গাড়িওয়ালা?
প্রশ্নটা রয়েই যাবে, এবং জ্যামও। কারণঃ   
১. পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ভিড়ে ঠাসা।
২. একা গাড়ি চালালে/ অড ইভেন লঙ্ঘন করলে ফাইন করবেন কাদের? যাদের  ওইটুকু ফাইনে কিচ্ছুই যায় আসেনা তাদের? দেশে ভি. আই. পি. এর অভাব আছে কি?
৩. জনসংখ্যা কমাবেন কি করে? জন্মনিয়ন্ত্রণ? সে তো জনসংখ্যার বৃদ্ধির হারকে কমানোর সামান্য প্রচেষ্টা মাত্র।
৪. ট্রাফিক সিগ্ন্যাল তো ভিড়কে থামায়। গতিকে আরও রোধ করে। এ দিয়ে সাকুল্যে কিছুটা নিয়ন্ত্রণ তবুও হতে পারত। কিন্তু কজন মানে? আমি নিজেই তো ট্রাফিক লাইটে বিশ্বাস করে দু বার মরতে মরতে বেঁচেছি।
ভাবনার জালের বিস্তার আজ এটুকু। বাকি গল্প কমেন্টে হোক।

says:
দীপঙ্কর বসু ভারতবর্ষের প্রায় প্রতিটি মেট্রো শহরেই চিত্রটা একই রকম | রস্তাঘাটের ধারন ক্ষমতার চেয়ে বহুগুন বেশী গাড়ি রাস্তায় চলাচল করে ফলে রাস্তায় জ্যামজট হওয়া অবধারিত| ফ্লাইওভার গড়ে‚বিভিন্ন রাস্তাকে একমুখী (one way) করে অবস্থার কিছুটা সামাল দেবার চেষ্টা হচ্ছে বটে ‚কিন্তু যে হারে প্রতিদিন রাস্তায় যানবাহনের সংখ্যা বাড়ছে তার তুলনায় সেই প্রচেষ্টা যে যথেষ্ট নয় তা বলার অপেক্ষা রাখেনা |
জানিনা বাস্তবে সম্ভব কিনা তবে আমার মনে হয় দিনের ব্যস্ততম সময়গুলিতে কিছু কিছু এলাকায় প্রাইভেটে গাড়ির প্রবেশ নিষিদ্ধ করা এবং পরিবর্তে আরাম প্রদ পাবলিক ট্রান্স্পোর্টের ব্যবস্থা গড়ে তোলাটা জরুরী|
undefined says: undefined

হাঁড়ির হাল - পর্ব 2

null says: null

জ্যাম জ্যাম
********************************************
কোলকাতার কোন এক মেট্রো স্টেশন। সম্ভবতঃ শহীদ ক্ষুদিরাম বা কবি সুভাষ। যেতে হবে ধর্মতলা। বিকেলের দিকে ধর্মতলা থেকে একটা বাস পাওয়া যায়, যেটা ডাইরেক্ট আমাদের গ্রাম পর্যন্ত যাবে। হাতে একটা চাকা দেওয়া ব্যাগ। ঠিক মেট্রো স্টেশনে ঢুকতে যাব এমন সময়...

কোলকাতা মেট্রোতে চেকিংয়ের ব্যবস্থা দেখিনি যতবারই গেছি। দিল্লি মেট্রোতে চড়ে অভ্যেস। তাই কেমন যেন ফাঁকা ফাঁকা লাগে চেকিং না থাকলে। এরকম ব্যবস্থা দেখেছিলাম দক্ষিণ কোরিয়ার মেট্রো স্টেশনগুলিতে। ওদের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা যদিও শোভা পায়। সেখানকার মানুষ অত্যন্ত নিরীহ প্রকৃতির। তাই কোন ক্রাইমের কথা ওখানে ভাবাই যায় না। বিশ্বাস থাকলে অবশ্য চেকিংয়ের কোন দরকার পরে না। যেমন ধরুন, আমাদের রেলস্টেশনগুলোয়ও তো তেমন কোন চেকিং থাকে না।
এই সুযোগে কেউ কেউ হয়ত আমাকে ইতিমধ্যেই দেশদ্রোহী ভাবতে শুরু করে দিয়েছে। কিন্তু যা যাই ভাবুন এই দেশকে ভাল না বেসে থাকতেই পারবনা, বিশ্বাস করুন।

লাইসেন্স নেই? লাইনে দাঁড়াবারও সময় নেই? ন্যুনতম একটা টোকেন অ্যামাউন্ট ধরে দিলেই হল; লাইসেন্স আপনার ঘরে পৌঁছে যাবে।
পাসপোর্টের সব ভেরিফিকেশন কমপ্লিট, কিন্তু মনে একটু খুঁত রয়ে গেল কি? কেউ তো বাড়তি একপয়সাও চাইলেন না এখনও... এক দু সপ্তাহ নিশ্চিন্তে অপেক্ষা করে নিন। তিন সপ্তাহের মাথায় ঠিক ফোন এসে যাবে অমুক যায়গায় গিয়ে টাকা দিয়ে আসার দাবী নিয়ে।

হ্যাঁ যেটা বলছিলাম... মেট্রো স্টেশনে ঢুকতে যাব এমন সময় জনৈক গার্ড কোথা থেকে যেন আবির্ভূত হলেন।
- ওই ব্যাগ নিয়ে ভেতরে যাওয়া যাবেনা।
- কেন? চেক করবেন তো করে নিন...
- না অত বড় ব্যাগ নিয়ে ভেতরে যাওয়া যাবে না।
- ওজনের লিমিট কত?
- লিমিট ফিমিট বাদ দাও, অত বড় ব্যাগ অ্যালাওড নেই।
- কিসের লিমিট, কত লিমিট সেটা তো বলুন...
- ও তোমার ব্যাগ অনেক বড়... রেঞ্জে হবেই না...
বোকার মত প্রশ্ন করলাম, “ব্যাগটার ভাড়া নেওয়ার কোন ব্যবস্থা নেই? কিম্বা ধরুন যদি দুজনের ভাড়া দিই...”
যদিও এ প্রশ্নের উত্তর ‘না’ হওয়ারই কথা ছিল তবুও একটা শেষ চেষ্টা করে নিলাম...
নাহ শেষ পর্যন্ত মেট্রোতে চড়া হলনা। হাতে মাত্র দেড় ঘন্টা, আশাকরি পৌঁছে যাবো যদি সময়মত একটা ট্যাক্সি পাই।

ট্যাক্সিও পাওয়া গেল। কিন্তু দরাদরিটা একটু বেশিমাত্রায় করতে হল...
সে বলে, “সাড়ে ছশ”
আমি বলি, “ঢাইশ মে যাওগে?”
- পাঁচশ বাবু, ইসসে কম মে হো নাহি পায়েগা...
- তিনশ শে জাদা নেহি দুঙ্গা... জানা হ্যায় তো চলো...

এইভাবে অনেক চেষ্টায় সাড়ে তিনশ’তে রফা হল। হ্যাঁ কোলকাতার রাস্তাতেও আজকাল হিন্দিতে কথা বলতে হয়... অন্তত আমি যতবার গেছি, বলতে হয়েছে।

একে তো রাস্তা চিনিনা, তার উপর ড্রাইভার বার বার কোন রাস্তায় যাবে জিজ্ঞেস করছে। আমিও জি. পি. এস. দেখে নিজের কনফিডেন্স বজায় রাখার চেষ্টা করছি। প্যাচপেচে ঘাম, শ্বাসরুদ্ধকর জ্যামের মাঝে হঠাৎ আবিষ্কার করলাম, আর মাত্র আধ ঘন্টা বাকী। এর মধ্যে না পৌঁছতে পারলে ডাইরেক্ট বাস টা মিস হবে। ড্রাইভারকে বলতেই উনি বললেন উনি নাকি আগেই কোন এক শর্টকাট নিয়ে ফেলেছেন, কিন্তু কোন সুবিধা করতে পারেননি।

বাসস্ট্যান্ড পৌঁছলাম বাস ছাড়বার মাত্র পাঁচ মিনিট পর।  (চলবে)

says:
অর্ণব(অরিন্দম রায়) এতো সেই খুব পড়াশুনা করা ছেলেদের মত হল‚ জানে সবই কিন্তু ব্যবহারিক প্রয়োগ নেই|

নিজেই তো বললে কি করলে সব মুশকিল আসান হয়‚ দিলে না কেন হাতে ১০০ টাকা গুঁজে?

বাসও মিস হত না‚ ২৫০ টাকাও বেঁচে  যেত ট্যাক্সি ভাড়ার|
says:
মানব হুম, আসলে হয়েছে কি, আজ পর্যন্ত যাদের সংগে এই ধরনের চুক্তি হয়েছে, তারা সবাই মুখ ফুটে তাদের দাবী পেশ করেছেন। এই ঘটনাটা এর ব্যতিক্রম ছিল। তাছাড়া একটু ভয় ভয়ও করে বৈকি... উনি যদি হঠাৎ সৎ, চরিত্রবান বেরিয়ে পরেন...

says:
জল মেট্রোতে অত বড় ব্যাগ তুলতে দেয় না| সে ১০০ টাকা দিলেও না| আর এখন তো সব মেট্রো স্টেশনে চেকিং হয়‚ তবে মাঝে মাঝে ঢিলেমিও চলে| এই তো সেদিন ১০ টাকা দিয়ে একটা টোকেন নিয়ে কিছুতেই ঢুকতে পারছি না‚ ঢুকতেই দিচ্ছে না| একজন বললেন গিয়ে টিকিট কাউন্টারে বলুন| গেলাম‚ তিনি বললেন চেকিং এ যিনি আছেন তাকে বলুন| কিন্তু চেকিং এ কাউকেই দেখতে না পেয়ে ভাবলাম কি করা যায়? দেরী হয়ে যাচ্ছে অফিস যেতে| কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে একজন যে ঢুকলো আমিও তড়িৎ গতিতে ঢুকে পড়লাম| জানি কাজটা ঠিক হল না কিন্তু তখন সত্যি আমি লেট হয়ে গেছি| দেশটা ভারত রাজ্যটা পশ্চিমবঙ্গ  আর শহরটা কলকাতা বলেই বুঝি সম্ভব হল|
says:
ঝিনুক দুবছর আগে মুনের বাড়িতে আড্ডা| মেট্রোতে শঙ্খর ব্যাগ চেক করে কাশির ওষুধ ধরা পড়ল গড়িয়া স্টেশনে| সে তো কিছুতেই সেই বোতল নিয়ে ভিতরে যেতে দেবে না সিকিওরিটি দাদা| ওদিকে টিকিট কাটা হয়ে গেছে‚ সোমা আর মুন অপেক্ষা করবে আমাদের জন্য দমদমে| ট্যাক্সি নিয়ে যেতে হলে তো রাত কাবার হয়ে যাবে| আমার আবার সেদিন একটা পুঁচকে ব্যাগ সাথে| শঙ্খ বেচারা ভালোমানুষ‚ নিয়ম ভাঙার কথায় হাত পা ঠাণ্ডা হয়ে যাবার জোগাড়| ওদিকে দেরী হয়ে যাচ্ছে| একখানা মোটকা থামের আড়ালে দাঁড়িয়ে কাগজে জড়ানো বোতলটা আমার সেই ব্যাগে চালান করে দিলাম| মুহূর্তের মধ্যে বেচারী তন্বী ব্যাগটা একেবারে আসন্নপ্রসবা| দিব্যি বুকে চেপে ধরে গায়ে আঁচল দিয়ে সেই সিকিওরিটি দাদার নাকের ডগা দিয়ে গলে গেলাম ভেতরে| শঙ্খ আবার ব্যাগ চেক করিয়ে ধীরে সুস্থে ভিতরে এল| যার জন্য চুরি করি‚ সেই বলে চোর‚ প্ল্যাটফর্মে পা দিয়েই বলে কিনা‚ সত্যি মাইরি‚ আতঙ্কবাদীরা তোমায় পেলে লুফে নেবে‚ ঝিনুকদি.....😩
undefined says: undefined

আরো পড়ুন